Preventive Care
3 মিনিট পড়ার সময়
যক্ষ্মা/Tuberculosis : নিরাময়যোগ্য রোগ।
যক্ষ্মার জীবাণু,শুধু ফুসফুসকেই আক্রমণ করে না,ফুসফুস বহির্ভূত যেকোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে ও আক্রান্ত করতে পারে। একে Extra Pulmonary TB বলা হয়।

Dr. Sharmin sultana(Setu)
Medical Professional
70 day(s) ago
18 বার দেখা হয়েছে

#যক্ষ্মা ভালো হয়# সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় ও পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা কোর্স সম্পন্ন করলে এই রোগ থেকে সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব।
যক্ষ্মা: নিরাময়যোগ্য রোগ, প্রয়োজন শুধু সচেতনতা ও নিয়মানুবর্তিতা........
একসময় যক্ষ্মা (Tuberculosis বা TB) নাম শুনলেই মানুষ আতঙ্কিত হতেন। তবে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে এখন আর সেই দিন নেই। যক্ষ্মা এখন সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য একটি রোগ। এই রোগ নির্মূলের প্রধান চাবিকাঠি হলো সচেতনতা এবং নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ।
সাধারণ বা শারীরিক লক্ষণ :
এই লক্ষণগুলি সাধারণত শরীরের যেকোনো অঙ্গে (ফুসফুস ছাড়াও) সক্রিয় টিবি থাকলে দেখা যেতে পারে।যেমন :
• দীর্ঘস্থায়ী বা বারবার জ্বর আসা, যার কোনো সুস্পষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।
• অনেক সময় বিকেলে বা সন্ধ্যায় জ্বর বা ঠাণ্ডা লাগার অনুভূতি হওয়া।
• দ্রুত ওজন হ্রাস (Unexplained Weight Loss):
• কোনো চেষ্টা ছাড়াই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে এবং দ্রুত শরীরের ওজন কমে যাওয়া।
• ক্ষুধামান্দ্য: খাবারে রুচি বা ক্ষুধা কমে যাওয়া।
• ক্লান্তি ও দুর্বলতা: সারাক্ষণ ক্লান্তি অনুভব করা এবং শারীরিক দুর্বলতা।
ফুসফুস ছাড়াও যক্ষ্মা শরীরের অন্যান্য অঙ্গকে আক্রান্ত করতে পারে:
যক্ষ্মার জীবাণু,শুধু ফুসফুসকেই আক্রমণ করে না। এটি রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং ফুসফুস বহির্ভূত যেকোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করতে পারে। একে Extra Pulmonary TB বলা হয়।
ফুসফুস ছাড়াও শরীরের যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে যক্ষ্মা হতে পারে, তার মধ্যে কয়েকটি প্রধান অঙ্গের নাম নিচে দেওয়া হলো:
• 🎗️ লসিকাগ্রন্থি বা লিম্ফ নোড (Lymph Node TB): ফুসফুসের বাইরে এই ধরনের যক্ষ্মা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, বিশেষ করে ঘাড় বা বগলের লসিকাগ্রন্থিতে গুটির মতো ফোলা দেখা যায়।
• 🧠 মস্তিষ্ক ও মস্তিষ্ক আবরণী (TB Meningitis) : মস্তিষ্কের আবরণীকে আক্রান্ত করলে মারাত্মক মেনিনজাইটিস হতে পারে, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বা টিউবারকিউলোমা (Tubeculoma of brain)।
• 🦴 হাড় ও অস্থিসন্ধি (Bone and Joint TB): মেরুদণ্ড, হাঁটু বা অন্য যেকোনো অস্থিসন্ধিতে হতে পারে। মেরুদণ্ডের যক্ষ্মা হলে পিঠে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
• কিডনি ও মূত্রনালী (Genito-urinary TB): কিডনি এবং মূত্রনালীর মতো অঙ্গকেও আক্রান্ত করতে পারে।
🫁 ফুসফুসের আবরণী (Pleural TB) : ফুসফুসের পর্দায় পানি জমা)।
• 🍴 অন্ত্র বা পেটের পর্দা (Abdominal/Gastrointestinal TB): পেটের ভেতরের অংশ, অন্ত্র বা পেরিটোনিয়াম নামক পর্দায় যক্ষ্মা হতে পারে।
• 🫀 হৃদপিণ্ডের আবরণী (Pericardial TB): হৃদপিণ্ডের বাইরের আবরণীতে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
• ত্বক (Skin TB): ক্ষেত্রবিশেষে ত্বকেও যক্ষ্মার সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
• Eyes /চোখ :চোখের বিভিন্ন অংশে সংক্রমণ।
• Adrenal TB: হরমোন উৎপাদনকারী এই. . গ্রন্থিতে সংক্রমণ।
রোগ নির্মূলে যে সচেতনতা অবলম্বন করা জরুরি:
১. নিয়মিত ও পুরো কোর্স ওষুধ সেবন:
• নিয়মানুবর্তিতা আবশ্যক: যক্ষ্মার প্রধান চিকিৎসা হলো দীর্ঘদিন ধরে (সাধারণত ৬ মাস বা তার বেশি) ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিতভাবে ওষুধ সেবন করা। একদিনও ওষুধ বাদ দেওয়া যাবে না।
• চিকিৎসা অসম্পূর্ণ নয়: মাঝপথে রোগের লক্ষণ কমে গেলেও বা নিজেকে সুস্থ মনে হলেও চিকিৎসা কোর্স শেষ না করা পর্যন্ত ওষুধ সেবন বন্ধ করা উচিত নয়। চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রাখলে রোগটি আবার ফিরে আসতে পারে এবং আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে, যাকে মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি (MDR-TB) বলা হয়। MDR-TB-এর চিকিৎসা অনেক কঠিন ও দীর্ঘমেয়াদী।
২. চিকিৎসকের ফলোআপে থাকা:
• পরীক্ষা ও ফলোআপ: চিকিৎসার সময়কালে এবং কোর্স শেষে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ফলোআপে থাকা এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলো করানো জরুরি।
• রোগ নির্মূল নিশ্চিত করা: চিকিৎসকের মাধ্যমে যক্ষ্মা নির্মূল হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া চিকিৎসা বন্ধ করা উচিত নয়।
মনে রাখবেন, যক্ষ্মা নিরাময় সম্ভব। এই রোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা এবং তা মেনে চলা আমাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য এবং সমাজ থেকে যক্ষ্মা নির্মূল করার জন্য অপরিহার্য।
ডা:শারমিন সুলতানা (সেতু)
মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ
যক্ষ্মা: নিরাময়যোগ্য রোগ, প্রয়োজন শুধু সচেতনতা ও নিয়মানুবর্তিতা........
একসময় যক্ষ্মা (Tuberculosis বা TB) নাম শুনলেই মানুষ আতঙ্কিত হতেন। তবে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে এখন আর সেই দিন নেই। যক্ষ্মা এখন সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য একটি রোগ। এই রোগ নির্মূলের প্রধান চাবিকাঠি হলো সচেতনতা এবং নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ।
সাধারণ বা শারীরিক লক্ষণ :
এই লক্ষণগুলি সাধারণত শরীরের যেকোনো অঙ্গে (ফুসফুস ছাড়াও) সক্রিয় টিবি থাকলে দেখা যেতে পারে।যেমন :
• দীর্ঘস্থায়ী বা বারবার জ্বর আসা, যার কোনো সুস্পষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।
• অনেক সময় বিকেলে বা সন্ধ্যায় জ্বর বা ঠাণ্ডা লাগার অনুভূতি হওয়া।
• দ্রুত ওজন হ্রাস (Unexplained Weight Loss):
• কোনো চেষ্টা ছাড়াই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে এবং দ্রুত শরীরের ওজন কমে যাওয়া।
• ক্ষুধামান্দ্য: খাবারে রুচি বা ক্ষুধা কমে যাওয়া।
• ক্লান্তি ও দুর্বলতা: সারাক্ষণ ক্লান্তি অনুভব করা এবং শারীরিক দুর্বলতা।
ফুসফুস ছাড়াও যক্ষ্মা শরীরের অন্যান্য অঙ্গকে আক্রান্ত করতে পারে:
যক্ষ্মার জীবাণু,শুধু ফুসফুসকেই আক্রমণ করে না। এটি রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং ফুসফুস বহির্ভূত যেকোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করতে পারে। একে Extra Pulmonary TB বলা হয়।
ফুসফুস ছাড়াও শরীরের যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে যক্ষ্মা হতে পারে, তার মধ্যে কয়েকটি প্রধান অঙ্গের নাম নিচে দেওয়া হলো:
• 🎗️ লসিকাগ্রন্থি বা লিম্ফ নোড (Lymph Node TB): ফুসফুসের বাইরে এই ধরনের যক্ষ্মা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, বিশেষ করে ঘাড় বা বগলের লসিকাগ্রন্থিতে গুটির মতো ফোলা দেখা যায়।
• 🧠 মস্তিষ্ক ও মস্তিষ্ক আবরণী (TB Meningitis) : মস্তিষ্কের আবরণীকে আক্রান্ত করলে মারাত্মক মেনিনজাইটিস হতে পারে, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বা টিউবারকিউলোমা (Tubeculoma of brain)।
• 🦴 হাড় ও অস্থিসন্ধি (Bone and Joint TB): মেরুদণ্ড, হাঁটু বা অন্য যেকোনো অস্থিসন্ধিতে হতে পারে। মেরুদণ্ডের যক্ষ্মা হলে পিঠে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
• কিডনি ও মূত্রনালী (Genito-urinary TB): কিডনি এবং মূত্রনালীর মতো অঙ্গকেও আক্রান্ত করতে পারে।
🫁 ফুসফুসের আবরণী (Pleural TB) : ফুসফুসের পর্দায় পানি জমা)।
• 🍴 অন্ত্র বা পেটের পর্দা (Abdominal/Gastrointestinal TB): পেটের ভেতরের অংশ, অন্ত্র বা পেরিটোনিয়াম নামক পর্দায় যক্ষ্মা হতে পারে।
• 🫀 হৃদপিণ্ডের আবরণী (Pericardial TB): হৃদপিণ্ডের বাইরের আবরণীতে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
• ত্বক (Skin TB): ক্ষেত্রবিশেষে ত্বকেও যক্ষ্মার সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
• Eyes /চোখ :চোখের বিভিন্ন অংশে সংক্রমণ।
• Adrenal TB: হরমোন উৎপাদনকারী এই. . গ্রন্থিতে সংক্রমণ।
রোগ নির্মূলে যে সচেতনতা অবলম্বন করা জরুরি:
১. নিয়মিত ও পুরো কোর্স ওষুধ সেবন:
• নিয়মানুবর্তিতা আবশ্যক: যক্ষ্মার প্রধান চিকিৎসা হলো দীর্ঘদিন ধরে (সাধারণত ৬ মাস বা তার বেশি) ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিতভাবে ওষুধ সেবন করা। একদিনও ওষুধ বাদ দেওয়া যাবে না।
• চিকিৎসা অসম্পূর্ণ নয়: মাঝপথে রোগের লক্ষণ কমে গেলেও বা নিজেকে সুস্থ মনে হলেও চিকিৎসা কোর্স শেষ না করা পর্যন্ত ওষুধ সেবন বন্ধ করা উচিত নয়। চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রাখলে রোগটি আবার ফিরে আসতে পারে এবং আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে, যাকে মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি (MDR-TB) বলা হয়। MDR-TB-এর চিকিৎসা অনেক কঠিন ও দীর্ঘমেয়াদী।
২. চিকিৎসকের ফলোআপে থাকা:
• পরীক্ষা ও ফলোআপ: চিকিৎসার সময়কালে এবং কোর্স শেষে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ফলোআপে থাকা এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলো করানো জরুরি।
• রোগ নির্মূল নিশ্চিত করা: চিকিৎসকের মাধ্যমে যক্ষ্মা নির্মূল হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া চিকিৎসা বন্ধ করা উচিত নয়।
মনে রাখবেন, যক্ষ্মা নিরাময় সম্ভব। এই রোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা এবং তা মেনে চলা আমাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য এবং সমাজ থেকে যক্ষ্মা নির্মূল করার জন্য অপরিহার্য।
ডা:শারমিন সুলতানা (সেতু)
মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ
ট্যাগসমূহ
##ডাশারমিনসুলতানাসেতু #drsharminsultanasetu #chestmedicinespecialist #tuberculosis #যক্ষ্মা #islamibankhospitalmotijheel #Hemoptysis #rampura #doctorspoint
1 মন্তব্য
